কলকাতা: পাকিস্তানে যে মন্দা ক্রমেই অতীতের সমস্ত রেকর্ডকে ছাপিয়ে যাচ্ছে তা আগেই জানা গিয়েছিল। দিন যত যাচ্ছে পরিস্থিতি যেন ততই খারাপ হচ্ছে। এমনকি বেঁচে থাকার জন্য যে প্রাথমিক বিষয়গুলি একটা মানুষের লাগে তার জোগান দিতে গিয়েও ছুটছে কালঘাম। ভারতের এই প্রতিবেশী দেশে এখন অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থানের সংস্থান করতে গিয়ে নাজেহাল হচ্ছে সাধারণ মানুষ। বসবাসের জন্য এখন এশিয়ার সবচেয়ে ব্যয়বহুল দেশ হয়ে উঠছে পাকিস্তান। হ্যাঁ, এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাঙ্ক (এডিবি) তাদের সাম্প্রতিক রিপোর্টে বলেছে, জীবনযাত্রার জন্য যা খরচ হয় তা এশিয়ার মধ্যে পাকিস্তানে সবচেয়ে বেশি।
এর একটি বড় কারণ হিসাবে সে দেশের উচ্চ মুদ্রাস্ফীতির হারকেও দুষছেন অনেকেই। পাকিস্তানে মুদ্রাস্ফীতির হার ২৫ শতাংশে। এ কারণে প্রতি বছরই সেখানে টাকার মূল্য কমছে। দাম বাড়ছে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের। যার কারণে রেশন ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় জিনিস কিনতে বিপুল খরচ করতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে। তবে বর্তমান পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে পাকিস্তানের অর্থনীতি ১.৯ শতাংশ হারে বৃদ্ধি পেতে পারে বলে মনে করছে এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাঙ্ক। তাঁদের রিপোর্টেও সে কথা উল্লেখ করা হয়েছে।
এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট আউটলুক পাকিস্তানের জন্য আগামী অর্থ বছরের জন্য একটি হতাশাজনক ছবি তুলে ধরেছে। এই সময়ের মধ্যে, দেশে মুদ্রাস্ফীতির হার ১৫ শতাংশে থাকতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। অন্যদিকে জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার ২.৮ শতাংশে পৌঁছাবে বলে আশা করা হচ্ছে। তা যদিও বর্তমান অবস্থার থেকে অনেকটাই ভাল। মুদ্রাস্ফীতির কারণে পাকিস্তান দীর্ঘদিন ধরেই মন্দার মধ্যে রয়েছে। বিশ্বব্যাঙ্ক গত সপ্তাহে বলেছিল, মুদ্রাস্ফীতির কারণে দেশের এক কোটি মানুষ দারিদ্রের কবলে পড়তে পারে। পাকিস্তানের প্রায় ৯ কোটি ৮০ লক্ষ মানুষ ইতিমধ্যে দারিদ্র্যতাকে সঙ্গী করেই বেঁচে আছেন। দেশের অতিরিক্ত ঋণ তার অবস্থার আরও অবনতি করেছে। শোধ হয়নি আন্তর্জাতিক অর্থ তহবিলের কাছে করা ঋণ। সূত্রের খবর, পাকিস্তান বর্তমানে আন্তর্জাতিক অর্থ তহবিল (IMF) থেকে প্রাপ্ত ৩ বিলিয়ন ডলারের বেলআউট প্যাকেজের জন্য নির্ধারিত শর্তের ভিত্তিতে কাজ করছে। এ জন্য সেখানে পেট্রোল-ডিজেলের দামও বাড়ানো হয়েছে। এখন দেখার পরিস্থিতির বদল কবে আসে।