আহমেদাবাদ: কাউকে বোকা বলতে গেলে কথায় কথায় ‘গাধা’ বলি। কিন্তু আমাদের জীবনে এই গাধাই কত গুরুত্বপূর্ণ জানেন? দুর্গম জায়গায় ভারী মালপত্র বহন করে নিয়ে যাওয়ার জন্য যেমন গাধাকেই ব্যবহার করা হয়, তেমনই আবার গাধার দুধ থেকেও মাসে লাখ টাকা আয় করা যায়। আপনি কি জানেন, গরুর দুধের থেকে ৭০ গুণ বেশি দাম গাধার দুধের দাম? এই ব্যবসা করেই মালামাল হয়ে গিয়েছেন এক দুধ ব্যবসায়ী।
ধীরেন সোলাঙ্কি নামে গুজরাটের এক ব্যবসায়ী একটি গাধার খামার খুলেছেন, যেখানে মোট ৪২টি গাধা প্রতিপালন করছেন। এই গাধার দুধ বিক্রি করেই প্রতি মাসে ২ থেকে ৩ লক্ষ টাকা উপার্জন করছেন তিনি।
গুজরাটের পাটান জেলার বাসিন্দা ওই ব্যবসায়ী জানিয়েছেন, কর্মজীবনের শুরুতে তিনি সরকারি চাকরি খুঁজেছিলেন, না পেয়ে বেসরকারি চাকরিও খুঁজেছেন। কিন্তু এমন কোনও চাকরি পাননি, যা পরিবারের খরচ বহন করবে এবং ভবিষ্যতের জন্য অর্থ সঞ্চয়ও করবে। সেই সময়ই একদিন গাধা প্রতিপালনের কথা জানতে পারেন। দক্ষিণ ভারতে বাড়ন্ত এই ব্যবসা সম্পর্কে খোঁজখবর নেওয়ার পর ৮ মাস আগে তিনি নিজের গ্রামেও গাধার খামার খোলার সিদ্ধান্ত নেন।
শুরুতে ২০টি গাধা নিয়ে ব্যবসা শুরু করেছিলেন। কিন্তু গুজরাটে গাধার দুধের কোনও চাহিদা নেই। পাঁচ মাস কার্যত খালি হাতেই বসে থাকতে হচ্ছিল তাঁকে। এরপর তিনি দক্ষিণ ভারতের বিভিন্ন কোম্পানির সঙ্গে যোগাযোগ করেন। আর এতেই শিকে ছেঁড়ে। দক্ষিণ ভারতে গাধার দুধের ব্যাপক চাহিদা। সেখানেই দুধ রফতানি করতে শুরু করেন তিনি। বর্তমানে কর্নাটক ও কেরলে দুধ সরবরাহ করেন তিনি। বিভিন্ন প্রসাধনী বা কসমেটিক্স কোম্পানিও তাঁর কাছ থেকে দুধ কেনেন নিজেদের পণ্যে ব্যবহার করার জন্য।
ওই ব্যবসায়ী জানিয়েছেন, যেখানে গরুর দুধের দাম ৫০ থেকে ৬৫ কেজির মধ্যে ঘোরাফেরা করে, সেখানেই গাধার দুধের দাম ৫০০০ থেকে ৭০০০ টাকা। ফলে কম পরিমাণ দুধ বিক্রি করেও বিপুল অর্থ উপার্জন হয় প্রতি মাসে।
গাধার দুধ আবার শুকিয়ে, পাউডারের আকারেও বিক্রি করা যায়। এক্ষেত্রে দুধের দাম লিটার প্রতি ১ লক্ষ টাকা অবধি পৌঁছতে পারে। এই ব্যবসা করেই বর্তমানে মাসে লাখ লাখ টাকা উপার্জন করছেন ব্যবসায়ী। তিনি জানিয়েছেন, বর্তমানে তাঁর ফার্মে ৪২টি গাধা রয়েছে। ৩৮ লক্ষ টাকা বিনিয়োগ করেছেন তিনি। সরকারের থেকে আর্থিক সাহায্য নেওয়ারও প্রয়োজন পড়েনি।
গাধার দুধের উপকারিতা-
মিশরের রানি ক্লিওপেট্রা গাধার দুধে স্নান করতেন। এতে ত্বক চকচকে হত। এছাড়া গাধার দুধ পান করলে লিভারের সমস্যা কমে। নাক থেকে রক্ত পড়া, সংক্রামক রোগ ও জ্বর কমে গাধার দুধে। এমনকী, বিষক্রিয়া কমাতেও সাহায্য করে গাধার দুধ।